রাজিয়া বেগম ছাত্রীনিবাস
শিক্ষাক্ষেত্রে নারীদের প্রভাব সম্বন্ধে নেপোলিয়ান বলেছিলেন, ‘আমাকে শিক্ষিত মা দাও, আমি তোমাদেরকে শিক্ষিত জাতি উপহার দেব’ স্বাবলম্বিতা অর্জনে নারী শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। ঐতিহ্যবাহী ও মহিলাদের সর্ববৃহৎ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইডেন মহিলা কলেজ নারী শিক্ষার অগ্রগতিতে অনন্য ভুমিকা পালন করছে। প্রতি বছর এ প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা লাভের স্বপ্ন নিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল হতে বিভিন্ন স্তরের শিক্ষার্থীরা ছুটে আসে। ২৩ টি বিভাগে অধ্যয়নরত বিপুল সংখ্যক ছাত্রীর আবাসন সমস্যা সমাধানকল্পে কলেজে রয়েছে ছয়টি ছাত্রী নিবাস। যার মধ্যে একটি রাজিয়া বেগম ছাত্রী নিবাস। ১৯৭৭ সালে এ ছাত্রী নিবাসটি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। এই ছাত্রী নিবাসের নামকরণ হয়েছে এই কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ প্রফেসর রাজিয়া বেগমের নামানুসারে। তিনি ২৪.১০.১৯৯৪ হতে ১৭.০৪.১৯৯৬ পর্যন্ত ইডেন
কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। প্রফেসর রাজিয়া বেগম অত্র কলেজের রসায়ন বিভাগে ২০.০১.১৯৮২ থেকে ১৩.১২.১৯৯৪ সাল পর্যন্ত বিভাগীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। আমরা এই জ্ঞানতাপস নিষ্ঠাবান শিক্ষকের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।
বর্তমানে আমি এই ছাত্রী নিবাসের তত্ত¡াবধায়কের দায়িত্ব পালন করছি। সহকারী তত্ত¡াবধায়কের হিসাবে আছেন মোছা: সেলিনা আক্তার, প্রভাষক, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ। অফিস সহকারী হিসেবে কর্মরত সুমনা বেগম। এ ছাড়া ০৩ জন নৈশ ও দিবা প্রহরী, ০৪ জন সুইপার, ০১ জন মালী, ০১ জন বৈদ্যুতিক মিস্ত্রি ও ০১ জন গভীর নলকুপ অপারেটর সার্বক্ষনিক দায়িত্ব পালন করছেন।
হোস্টেল এর পরিস্কার পরিছন্নতার বিষয়টি সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হয়। করোনা ও ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবেলায় অধ্যক্ষ মহোদয়ের নির্দেশনা মোতাবেগ কলেজের সার্বিক পরিছন্নতা অভিযানের অংশ হিসেবে ছাত্রীদের মধ্যে প্রচারনামূলক বিভিন্ন লিফলেট সরবরাহ, পোস্টার টানানোর পাশাপাশি প্রয়োজনীয় সংখ্যক মশা প্রতিরোধক ঔষধ ও সরঞ্জাম সরবরাহ করা হয়েছে। অধ্যক্ষ মহোদয় কলেজের কিছু অভিজ্ঞ চৌকস শিক্ষকবৃন্দের সমন্বয়ে একটি মনিটরিং সেল তৈরী করেছেন। যারা হোস্টেলের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেন ও প্রয়োজনবোধে সুচিন্তিত মতামত ও নির্দেশনা দিয়ে থাকেন। কলেজ ও হোস্টেলের শৃঙ্খলা রক্ষার সুবিধার্থে অধ্যক্ষ মহোদয় সকল হোস্টেল ও কলেজের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করেছেন। এতে তিনি নিজ অফিস কক্ষে বসেই কলেজের সার্বিক পরিস্থিতি তদারকি করতে
পারেন। সুযোগ্য অধ্যক্ষ প্রফেসর সুপ্রিয়া ভট্রাচার্যের পরামর্শ ও উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের মানসিক সমস্যা দূরিকরনে সাইক্রিয়াট্রিস্ট নিয়োগ ও মেডিটেশনের ব্যাবস্থা করা হয়। শিক্ষার্থীবান্ধব সম্মানিত অধ্যক্ষ মহোদয় ও উপাধ্যাক্ষ অধ্যাপক ফেরদৌসী বেগম এর উদ্যেগে ছাত্রীনিবাসে স্যানিটারী প্যাডের এর ভেন্ডিং মেশিন ও ওয়াশিং মেশিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
হোস্টেলের পরিসর ছোট হলেও মৌসুমী ফলের বাগান রয়েছে। হল প্রশাসনের তত্ত¡াবধানে ফল সংগ্রহ করে ছাত্রীদের মধ্যে বন্টন করে দেওয়া হয়। আরো রয়েছে ১০০০০ লিটার ধারণ ক্ষমতার বিশুদ্ধ খাবার পানির ট্যাংক। এই হলে অবস্থিত গভীর নলকূপ এর পানি এই টাংকিতে সংরক্ষিত হয়।পরবর্তীতে এটি পাইপের মাধ্যমে অন্যান্য সকল হোস্টেলসহ কলেজে খাবার পানির চাহিদা মিটায়।
রাজিয়া বেগম ছাত্রীনিবাসে বসবাসকারী শিক্ষার্থীদের ফলাফল বরাবরই মেধাতালিকার সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকে। প্রতি বছর বিসিএস পরীক্ষা, ব্যাংক ও অন্যান্য প্রতিযোগীতামূলক পরীক্ষা গুলোতে মেয়েরা কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ন হয় এবং বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জায়গায় চাকুরিতে নিয়োগ পেয়ে পরিবার ও দেশের জন্য কাজ করার সুযোগ পায়। এটা আমাদের ইডেন পরিবারের জন্য গর্বের বিষয়।