লাইব্রেরী

ইডেন কলেজ গ্রন্থাগার

অন্তহীন জ্ঞানের আঁধার হল বই, আর বইয়রে আবাসস্থল হল গ্রন্থাগার । মানুষরে হাজার বছররে লিখিত -অলিখিত সব ইতিহাস ঘুমিয়ে আছে একেকটি গ্রন্থাগাররে ছোট ছোট তাকে। গ্রন্থাগার হল কালের খেয়াঘাট , যেখান থেকে মানুষ সময়ের পাতায় ভ্রমণ করে। প্রাচীন  শিলালিপি থেকে আধুনকি লিপির গ্রন্থিক স্থান হল গ্রন্থাগার। একটি গ্রন্থাগার মানব জীবনকে যেমন  পাল্টে  দেয় তেমনি  আত্মার খোরাকও যোগায় । তাই গ্রন্থাগারকে বলা হয় শ্রেষ্ঠ আত্মীয় যার সাথে সবসময় ভালো সর্ম্পক থাকে। আর জ্ঞানর্চচা ও বিকাশের ক্ষেত্রে  গ্রন্থাগাররে ভূমকিা সর্বদায় অনন্য।

প্রমথ চৌধুরী গ্রন্থাগারের গুরুত্ব সর্ম্পকে বুঝাতে  গিয়ে  বলনে- “আমরা যত বেশি লাইব্রেরী প্রতিষ্ঠা করব, দেশের তত বেশি উপকার হবে। আমার মনে হয়, এ দেশে লাইব্রেরির সার্থকতা হাসপাতালের চাইতে কিছু কম নয় এবং স্কুল-কলেজের চাইতে একটু বেশি। শরীরে চিকিৎসার জন্য যেমন হাসপাতাল দরকার, মনের বিকাশের জন্যও তেমনি লাইব্রেরি দরকার”

শিক্ষার অন্যতম প্রধান লক্ষ্য প্রগতি  আর তার ক্ষেত্র হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ঠিক তেমনি একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইডেন মহিলা কলেজ। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি শতাব্দীর প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসাবে বাংলাদেশের আনাচে কানাচে আজ এক অতি সুপরিচিত নাম।

১৮৭৩ সনের কোন এক শুভক্ষণে এই প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরু হয়েছিল স্কুল হিসেবে। তখন মাত্র ৪৭জন ছাত্রী নিয়ে এই প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছিলো। তাই তখন হয়তো গ্রন্থাগারের প্রয়োজন ছিলো না। পরবর্তীকালে প্রতিষ্ঠানটি উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ এবং পরে  স্নাতক কলেজ হিসেবে উন্নীত হয়। ফলে আস্তে আস্তে গ্রন্থাগার জরুরী হয়ে পড়ে। আজিমপুরে এই স্থানে কলেজটি স্থাপিত হওয়ার পর ছাত্রী সংখ্যা দিন দিন বাড়তে থাকে। বর্তমানে প্রায় ৩০ হাজার ছাত্রীর রয়েছে ।

এই বিশাল পরিসরের ছাত্রীদের  প্রাণকেন্দ্র হয়ে উঠে গ্রন্থাগার।  পূর্বে এই গ্রন্থাগারটি মূল ভবনের দোতলায় ছিলো। তখন বইয়ের প্রাচর্য থাকলেও স্থানাভাব ছিলো প্রকট এবং অন্য সুবিধাগুলিও ছিলো প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। লাইব্রেরীর স্টাফও ছিলো প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। তাই এই সব বিষয়সহ কলেজের আগামী দিনের সম্ভাব্য চাহিদাকে প্রাধান্য দিয়েই নির্মাণ করা হয়েছে আজকের পৃথক দ্বিতল গ্রন্থাগার ভবন। শ্রেণী কক্ষ থেকে দূরে কোলাহল মুক্ত এক মনোরম পরিবেশে নির্মিত হয়েছে ১৪,৫০৮ বর্গফুটের এই সুদৃশ্য ভবন। গত ১৯৯৮ সনের ৫ই জানুয়ারী নতুনভাবে বই পত্র স্থানান্তর করা হয়।

নতুন ভবনে ছাত্রীদের বই লেনদেনের জন্য রয়েছে দুইটি  কাউন্টার । যেখান থেকে ছাত্রীরা গ্রন্থাগার কার্ড জমা দিয়ে প্রয়োজন অনুযায়ি বই নিতে পারে।  এছাড়াও একতলা ও দোতলায় রয়েছে সুবিশাল পাঠ কক্ষ। শিক্ষকদের জন্যও রয়েছে আলাদা পাঠ কক্ষ সুবিধা।  এই গ্রন্থাগারে শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের নানা কাজে সহায়তা করার জন্য রয়েছে বভিন্নি ধরনরে রেফারেন্স বই। যেখানে অনকে দুর্লভ বইও রয়েছে । সব মিলিয়ে প্রায় ৫৫ হাজারের অধিক বই রয়েছে এই গ্রন্থাগারে। তাই সবার চাহিদা মোতাবেক যথোপযুক্ত  বই যথাযথভাবে তাদের হাতে পৌঁছে দেয়া সম্ভব হচ্ছে।

এই গ্রন্থাগারে দৈনন্দিন ঘটনাবলী জানার জন্য ৩টি বাংলা ও ১টি ইংরেজি পত্রিকা রাখা হয়। বিভাগের চাহিদা অনুযায়ী  প্রতি বছরই সময় উপযোগী বই সংগ্রহের প্রক্রিয়া চালু রয়েছে। ফলে গ্রন্থাগারের সংগ্রহ দিন দনি স্ফীত হচ্ছে।

কলেজের অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ মহোদয়ের  পরামর্শ অনুযায়ী প্রশ্ন ব্যাংকের ডিজিটাল রিপোজিটরি চালু করা হয়েছে। যেখান থেকে ছাত্রিদের চাহিদা অনুযায়ী প্রশ্ন মেইলের মাধ্যমে খুব দ্রুত পেতে  পারে।

তাছাড়া ইডেন কলেজ গ্রন্থাগার দেশের বিভিন্ন গ্রন্থাগারের সাথে যোগাযোগ রেখে ঐসকল  গ্রন্থাগারের ই-রিসোর্স শেয়ারিং করছে। ছাত্রীদের চাহিদা অনুযায়ী অনলাইন জার্নাল, ই-বুক , গবেষনাপত্রও সরবরাহ করার জন্য অত্র কলেজের গ্রন্থাগারিক ও সহকারি গ্রন্থাগারিক সর্বদা সচেষ্ট থাকেন।